তলপেটের মেদ কমানোর ১০টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
তলপেটের মেদ কমানোর উপায় জানতে চান অনেকে। আসলে বর্তমানে আমাদের শরীরের মেদ একটি বড় ধরনের সমস্যা। তাই আমাদের এর প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে রাখা দরকার।
বর্তমানে মেদ বেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। আজকে এই আর্টিকেলে এর বিভিন্ন প্রতিকার এবং মেদ কমানোর খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্র - তলপেটের মেদ কমানোর কার্যকরী উপায়
- ভূমিকা
- তলপেটের মেদ কমানোর কার্যকারী উপায়
- মেদ কমাতে লেবু পানির উপকারিতা
- ওজন কমাতে শসার উপকারিতা
- ভাতের পরিবর্তে রুটি খাওয়ার অভ্যাস করা
- পেটের মেদ কমানোর খাবার তালিকা
- পেটের মেদ কমানোর যোগ ব্যায়াম সমূহ
- তলপেটের মেদ কমানোর ওষুধ
- মেদ কমাতে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা
- অ্যালকোহল বা নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকা
- তলপেটের মেদ কমাতে কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন করা
- মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়
- পরিশেষে
ভূমিকা
বর্তমানে আমাদের দেশে স্থুলতার প্রধান কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত মেদ। এই মেদ আমাদের শরীরের পক্ষে কতটা যে ক্ষতিকর সেটা আমরা অনেকে ভালোভাবেই জানি। অতিরিক্ত ওজন বা মেদ আমাদেরকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন করে এবং আস্তে আস্তে আমাদের অনেক রকম অসুখ-বিসুখের দিকে ঠেলে দেয়। তাই আগে সতর্ক হওয়া উচিত।
আমরা কল্পনাও করতে পারবো না অতিরিক্ত ওজন বা মেদ আমাদের শরীরের জন্য কতটা হুমকিস্বরূপ। শরীরের মেদ আমাদেরকে প্রথমে ছোটখাটো বিভিন্ন সমস্যা এবং পরে আস্তে আস্তে অনেক বড় অসুখ-বিসুখের দিকে নিয়ে যায়। যেমন রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই আমাদের জেনে নেওয়া উচিত এখান থেকে পরিত্রাণের উপায়।
তলপেটের মেদ কমানোর কার্যকারী উপায়
তলপেটের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তোবা প্রাথমিকভাবে জানি।
আমাদের যদি কোন কাজ সম্পর্কে জানা থাকে তাহলে আমরা সেই কাজটি খুব সহজেই করতে
পারি। ঠিক একই ভাবে যদি আমাদের এ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকে তাহলে আমরা এ সমস্যা
গুলোর হাত থেকে সহজেই রক্ষা পেতে পারি।
পেটের মেদ কমানোর অনেক উপায় রয়েছে। আজকে তার মধ্যে আমি আপনাদের সাথে দশটি
কার্যকরী বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। সেগুলো নিয়ে আলোচনা করার আগে আপনাদের জানা
দরকার যে মেদ বা অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমাদের শরীরে কি কি ধরনের সমস্যা হতে পারে।
মেদ বা অতিরিক্ত ওজন আমাদের শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক।
তাই এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের যে কার্যক্রম গুলো করতে হবে তার আগে
আমাদের অবশ্যই জানা দরকার যে আমরা এর জন্য কি কি সমস্যায় পড়তে পারি। তাহলে চলুন
আগে জেনে নেয়া যাক আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমাদের কি
কি সমস্যা গুলো হতে পারে বা কি ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতে পারি।
- শরীরে অতিরিক্ত মেদের বা অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা দেখা দেয়।
- অতিরিক্ত মেদের কারণে মধুমেহর বা ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণে বেড়ে যায়।
- এর কারণে আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে আমাদের রক্তের শিরা গুলোতে বিভিন্ন ব্লকেজের তৈরি হয়। যার কারণে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা কমে যেতে থাকে ফলে আমরা হার্ট অ্যাটাক সহ বিভিন্ন বড় বড় রোগের সম্মুখীন হয়।
- আমরা ভালোভাবে জানি যে শরীরের অতিরিক্ত ওজন বা মেদ হৃদরোগের সবচেয়ে বড় কারণ।
- কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমাদের ফুসফুসেও বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
- নারীদের অতিরিক্ত মেদের কারণে ব্রেস্ট ক্যান্সার এর ঝুঁকি থাকে।
- অতিরিক্ত মেদে হার্ট অ্যাটাক এর সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে দেয়।
- অতিরিক্ত মেদের কারণে আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হতে পারে। যা হার্ট এটাকের একটি কারণ।
- এর কারণে আমাদের হাটু কোমর এবং বিভিন্ন হাড়ের জয়েন্টে অনেক ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও এটি চোখ কিডনি সহ আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অতিরিক্ত ওজন আমাদের শরীরের জন্য কতটা যে ক্ষতিকর তা আমাদের চিন্তারও বাহিরে। চলুন
তাহলে এবার জেনে নেয়া যাক কিভাবে আমরা এই ভয়াবহতার হাত থেকে মুক্তি পেতে পারি
সহজেই।
মেদ কমাতে লেবু পানির উপকারিতা
অতিরিক্ত মেদ কমাতে বা ওজন কমাতে আমাদের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি জিনিস হচ্ছে লেবু পানি বা লেবুর শরবত। লেবুর শরবত আমাদের অনেকের কাছেই খুব প্রিয় একটি পানীয়। বিশেষ করে গরমের সময় এর চাহিদা আরো অনেক বেশি বেড়ে যায়। লেবু এবং পানি দুটোই আমাদের শরীরের পক্ষে খুব প্রয়োজনীয় দুটি উপাদান যেগুলো অনেক বেশি উপকারী।
লেবুর রস মিশানো পানি গুণে ও মানে শরবতহিসেবে চমৎকার। এটি আমাদের পাকস্থলীতে খাদ্য পরিপাক করার যে পাক রস থাকে তা তৈরিতে ত্বরান্বিত করে। যার ফলে আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের পাকস্থলীতে বিভিন্ন সমস্যা যেমন গ্যাস বা পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
লেবুর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ : আমরা অনেকে জানি যে লেবু হচ্ছে একটি
ভিটামিন সি এর বড় ধরনের উৎস। লেবুতে সাইট্রিক এসিড থাকে। আমরা জানি ভিটামিন সি
আমাদের শরীরের জন্য অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি আমাদের পরিপাক কার্যক্রম
ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। যার কারণে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
সকালে খালি পেটে লেবু পানি : আমাদের সকালে অনেকেরই অভ্যাস আছে ঘুম
থেকে ওঠার সাথে সাথে এক কাপ গরম চা বা কফি খাওয়া। তো আমরা যদি অতিরিক্ত মেদ
নিয়ে চিন্তিত থাকি তাহলে এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আমরা সকালে কফির বদলে একটু
কুসুম গরম পানির সাথে লেবু পানি পান করলে সেটি আমাদের জন্য অনেক উপকারে দিবে।
এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ লেবুর রস দিয়ে ( সাথে একটু মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন
) পান করা যেতে পারে। এতে করে আমাদের বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি পায়। আমাদের গ্রহণ
কৃত খাবার হজমে সাহায্য করে এবং আমাদের সারাদিন ক্ষুধা কম লাগে। যার কারণে আমাদের
শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয় না এবং অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে
দেয়।
যেভাবে লেবু পানি পান করবেন : আমরা যে এতক্ষণ লেবু পানি পান করার কথা
বললাম এটি আমাদের পান করার নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই জানা উচিত। কারণ প্রতিটি কাজ
করার আগে আমাদের এ কাজের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানা দরকার। তাহলে জেনে নেই লেবু
পানি কিভাবে পান করব।
- সকালে আমরা যখন খাবার খাই তার ৩০ মিনিট পূর্বে খালি পেটে আমাদের লেবু পানি খাওয়া উচিত। আমরা অনেকেই এই সময় চাপা কফি খেয়ে থাকি তার পরিবর্তে যদি আমরা লেবু পানি খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের এটি তল পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
- লেবু পানির সাথে একটু মধু মিশিয়ে খেলে আমাদের সারাদিন ক্ষুধা কম লাগে যার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালোরি প্রবেশ করার সুযোগ কম পায়। এতে করে আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং পেটের চর্বি জমতে পারে না।
- আবার খেয়াল রাখতে হবে যে, লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে দেয়। তাই অতিরিক্ত লেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং লেবু বা শরবত খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলি করে নেওয়া উচিত।
- এক্ষেত্রে আবার যদি গ্যাসের সমস্যা হয় তাহলে লেবু বা লেবু পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
উপরে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী যদি আমরা লেবু পানি নিয়মিত খেয়ে থাকে তাহলে আমাদের
তলপেটে সহ আমাদের শরীরে যে কোন জায়গার অতিরিক্ত চর্বি বা মেদ কমতে
থাকবে। কিন্তু একটি বিষয় হচ্ছে যে, আমরা যদি ভাবি আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো যা ইচ্ছা
তাই খাবার খাব এবং লেবু পানি খেলেই যে তা চর্বিক কমিয়ে ফেলবে এরকমটা নয়।
লেবু পানি দিয়ে চর্বি কমাতে চাইলেও অবশ্যই নিজের খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে।
যাতে করে অতিরিক্ত ফ্যাট বিশিষ্ট খাবার আমরা না খাই। শুধুমাত্র যে লেবু খেলেই
আমরা তলপেটের মেদ কমাতে সফল হব তা নয়। এক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের খাবার
তালিকার দিকে নজর রাখতে হবে। তাহলেই লেবু পানি এতে কাজে দিবে।
তাই আমরা সবশেষে বলতে পারি যে, লেবু পানি আমাদের তলপেটে চর্বি কমাতে পারে কিন্তু
সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের প্রথমত খাদ্য তালিকা মেনে চলতে হবে। লেবুতে যে পরিমাণে
ভিটামিন সি থাকে সে ভিটামিন সি আমাদের শরীরের চর্বি গলিয়ে তা কমাতে সাহায্য
করে।
ওজন কমাতে শসার উপকারিতা
শসা খুব পুষ্টিকর এবং ঠান্ডা একটি সবজি। শসা অনেকেই খুব পছন্দ করেন। আপনারা
আগে থেকে জানেন যে শসা আমাদের শরীরে চর্বি কমাতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে। আমাদের মধ্যে ছোট বড় সবাই অন্তত এই কথাটা জানি যে শসা আমাদের শরীরের চর্বি
কাটাতে অনেক বেশি উপকারী। তাই তলপেটের মেদ কমাতে আমরা শসা খেতে পারি।
সালাদ হিসেবে শসা খুব জনপ্রিয় একটি সবজি। আমরা অনেকে প্রতিনিয়ত তরকারির সাথে
সালাদ হিসেবে শসা খেয়ে থাকে। তাছাড়া অনেকে পাকা শসার তরকারিও রান্না করে খাই।
তাছাড়া কাচা শসা লবণ দিয়ে খেতেও বেশ মজাদার। সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে
বিশেষ করে আমরা গরমের সময় অনেক বেশি শসা খেয়ে থাকি।
শসার পুষ্টিগুণ : শসাতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ভিটামিনের ভরপুর
থাকে। শসাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন কে, ফসফরাস,
ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, বি 6, জিংক ইত্যাদি থাকে। শসা আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের
মাত্রা কমিয়ে দেয়। যার কারণে আমাদের শরীরের চর্বি কমতে বাধ্য হয়। ফলে আমাদের
তলপেটে চর্বি হ্রাস পায়।
আরো পড়ুন : সজনে ডাটার উপকারিতা ও অপকারিতা
শুধুমাত্র চর্বি কমাতেই নয়, শসা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। শসা খেলে
আমাদের পেটের বিভিন্ন ছোটখাট সমস্যা গুলোও দূর হয়। তাই আমরা যদি নিয়মিত পরিমান
মত শসা খাই তাহলে আমাদের তলপেটের মেদ কমানোর পাশাপাশিও আমরা বিভিন্ন উপকারিতা
গ্রহণ করতে পারব।
ওজন কমাতে শসা কিভাবে খাব : আমরা বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি এটি খাওয়ার আলাদা তেমন কোন নির্দিষ্ট ধরা বাধা নিয়মকানুন নেই। শসা খাওয়ার সবচেয়ে উত্তম সময় হচ্ছে দুপুরে এবং রাতে খাবার সময়। কারণ এ সময়ে আমরা বেশি করে খাবার খাই, আর শসা এগুলো পরিপাক কাজে সাহায্য করে এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এ সময় আপনি শসা একটু আলাদা রকম সালাদ করে খেতে পারেন। দুটি শসা ভালোভাবে কেটে নিয়ে সাথে দু চামচ লেবুর, রস সামান্য পরিমাণে চিনি, পরিমাণ মতো লবণ এবং সামান্য পরিমাণ অলিভ অয়েল দিয়ে সালাদ বানাতে পারেন। এতে করে শুধু আপনার পেটে ভরবে না পাশাপাশি এটি তলপেটে চর্বি কমাতে খুব বেশি কার্যকারী হবে।
শসার স্যুপ : আমরা জানি যে স্যুপ আমাদের ডায়েট কন্ট্রোলের জন্য অনেক
বেশি উপকারী সেজন্য আমরা তলপেটে মেদ কমানোর জন্য শসার খুব করে খেতে পারি। শসার
স্যুপ বানানো খুব সহজ একটি কাজ। আপনি ঘরে বসেই খুব সহজেই ভালোভাবে শসা স্যুপ বানাতে
পারেন। এটি করতে প্রথমে আপনার তিন থেকে চারটি শসা নিতে হবে।
তার সাথে নিতে হবে এক কাপ দই, দুই চামচ তাজা মেথি, এক কাপ পানি এবং এক চা চামচ লেবুর রস। এই সবগুলা শসার সাথে মিশে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তাহলেই তৈরি হয়ে গেল শসার স্যুপ। এই স্যুপ আপনি গরমে এবং ঠান্ডার সময়ও খেতে পারবেন যা আপনার তলপেটের চর্বি কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
কিভাবে শসা খেলে তাড়াতাড়ি ওজন কমবে : শসাতে উচ্চমাত্রায় পানি এবং
তার সাথে রয়েছে নিম্ন মাত্রায় ক্যালরি। তাই শসা সর্বোচ্চ উপকার পেতে চাইলে
শসা সালাদ এবং স্যুপ হিসেবে বেশি বেশি খেতে হবে। এতে করে তাড়াতাড়ি তলপেটে
চর্বি হ্রাস পাবে।। তাছাড়া কাচা শসা চিবিয়ে খেলে হজমে অনেক বেশি সাহায্য করে
থাকে।
অনেকে ভাবেন যে শসার স্যুপ কখন খেলে বেশি কার্যকারিতা দিবে। সেক্ষেত্রে বলা যায় যে শসার স্যুপ সাধারণত সকালে খালি পেটে খাওয়ার শ্রেয়। কারণে এটি খাবার আগে খালি পেটে খেলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালরি কম প্রবেশ করে। এজন্য শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা কম থাকে। শসার সাথে লেবুর রস মেদ কমাতে খুব উপকারী।
ভাতের পরিবর্তে রুটি খাওয়ার অভ্যাস করা
শরীরের ওজন ঠিক রাখতে এবং শরীর ফিট রাখতে খাদ্যাভ্যাসের কোন বিকল্প নেই। আমরা প্রতিনিয়ত ছোটখাটো যেই সমস্যা গুলোর সম্মুখীন হই এবং দেহের অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ভুগে থাকি তার প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন খাবারের ভুল তালিকা। তাই অনেক সমস্যা আছে যেগুলো আমরা খাদ্যাভ্যাস এর পরিবর্তন করেই সমাধান করতে পারি।
এদিকে অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন যারা রয়েছে তারা বেশিরভাগ সময়ই ভাতের পরিবর্তে রুটি খেয়ে থাকে।আপনারাও অনেকেই হয়তোবা এই বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন। তাই আমরা যদি সহজেই শরীরের অতিরিক্ত ওজন বা তলপেটের মেদ কমানোর চিন্তা-ভাবনা করি তাহলে আমাদের ভাতের পরিবর্তে রুটি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার।
যদিও ভাত এবং রুটির মধ্যে পুষ্টিগুণে তেমন কোন তফাৎ নেই। দুই খাবারই
কার্বোহাইড্রেট এর একটি বড় উৎস। যা আমাদের শরীরের জন্য অতীব জরুরী। সে সাথে
আমাদের আরেকটি বিষয় জানা উচিত আমরা কোন আটার রুটি খেলে মেদ কমাতে দ্রুত কাজে
দিবে। চলুন তাহলে জেনে নেই মেদ কমাতে আমাদের কোন আটার রুটি খাওয়া উচিত।
ওটসের আটা : এই আটাতে ভিটামিন খনিজ ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ গমের আটার চাইতেও অনেক গুণে বেশি থাকে। ওটস রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, শরীরের ওজন কমায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি আমাদের শরীরে ওটস এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। তাই মেদ কমাতে ভাতের পরিবর্তে ওটস এর রুটি খাওয়া যেতে পারে।
বেসনের আটা : আমরা অনেকে একে ডালের আঁটা বা ছোলার আটাও বলে
থাকি। এই ময়দাতে ফাইবার ও প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে কিন্তু ক্যালরির
পরিমাণ কম থাকে। যার ফলে এই ময়দা আমাদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করে আবার
ওজনও কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি নিয়মিত এই আটার রুটি খেলে ডায়াবেটিসের হাত
থেকেও অনেক দূরে থাকা যায়।
বজরা আটা : বজরা আটা গমের আটার পরিবর্তে ব্যবহার করা যেতে পারে। বজরা আটা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি এই আটা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস নিরাময় করে, হজমে সাহায্য করে। যদিও বজরা আটার রুটি গমের আটার রুটির চাইতে একটু শক্ত হয় তবুও ওজন কমাতে এটি বেশ উপকারি।
তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভাতের পরিবর্তে উপরে বর্ণিত আটার রুটিগুলো খেতে
পারেন। এতে করে খাবারের পুষ্টিগুনো ঠিক থাকবে পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন বা মেদ কমাতে
সাহায্য করবে। আমরা সাধারণত রাতের বেলায় ভাতের পরিবর্তে রুটি খেয়ে থাকি। তাই
আমরা যদি নিয়মিত ভাতের পরিবর্তে রুটি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলি অনেকটাই উপকৃত
হতে পারব।
পেটের মেদ কমানোর খাবার তালিকা
মেদ কমানোর খাবার তালিকা জানার জন্য আমরা অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করি। এখন আমরা দেখবো
পেটের মেদ কমাতে আমাদের যে খাবারগুলো খাওয়া দরকার এবং যে খাবারগুলো থেকে সতর্কতা
অবলম্বন করা দরকার। আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন বা তলপেটে মেদ জমার একটি বড় ধরনের
কারণ হচ্ছে আমাদের খাবারের তালিকা ঠিক না থাকা।
মূলত আমাদের খাবারের অনিয়ম এবং অস্বাস্থ্যকর বিভিন্ন খাবার খাওয়াটাই তলপেটে
মেদজমার প্রধান কারণ। সেজন্য আমাদের প্রথমেই এই ফাস্টফুড বা চর্বিযুক্ত খাবার
থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যত কিছুই খাই বা যত নিয়ম-কানুন মেনে চলি না কেন
আমাদের যদি খাবারের তালিকা স্বাস্থ্যকর না হয় তাহলে আমরা কোনভাবেই এই মেদজনিত
সমস্যার হাত থেকে বের হতে পারব না।
তাই আমরা যারা মেদ জনিত সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে চাচ্ছি তাদের প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে খাবার তালিকা নির্বাচন করা। সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই ফাস্টফুড বা চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক মেদ কমানোর জন্য আমাদের কোন কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত আর কোন খাবার বর্জন করা উচিত।
মেদ কমাতে কার্যকারী কয়েকটি খাবার
প্রথমেই বলছি যে মেদ কমানোর জন্য আমাদের যে খাবারগুলোতে চর্বি বা ফ্যাট কম সে খাবারগুলো আমাদের নির্বাচন করা উচিত। এক্ষেত্রে যারা ভোজন রসিক মানুষ তাদের জন্য একটু বিষয়টি কষ্টসাধ্য হবে। তবে নিজের শরীর এর জন্য অবশ্যই এই নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত। তা না হলে আমরা আস্তে আস্তে অনেক বড় ঝুঁকির মুখে চলে যাব।
পানি : প্রথমেই বলছি পানির কথা। আমরা সবাই জানি পানির অপর নাম জীবন। আসলে এই কথাটা অনেক গুরুত্ব রয়েছে। শুধুমাত্র পানিরই গুরুত্ব আমাদের শরীরে কত তা আমরা ভালোভাবে জানাই নেই। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি ওজন কমাতে সরাসরি অংশ নেয়।
তাই তলপেটের চর্বি কমাতে চাইলে অবশ্যই আমাদের দৈনিক কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত। এতে করে আমাদের খাবারের চাহিদা কম হবে এবং আমাদের ক্ষুধা
ভাবকে দূরে রাখবে। এতে করে আমাদের শরীরও চাঙ্গা থাকবে। তাই মেদ কমাতে দৈনিক পানি
পান করার কোন বিকল্প নেই।
ফল ও শাকসবজি : ফল ও সবজিতে প্রচুর পরিমাণ মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট এবং ফাইবার থাকে। এগুলো কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার বা আঁশ চর্বি কণাকে মলমূত্রের সাহায্যে আমাদের শরীর থেকে বাইরে বের করে দেয়। যার কারণে আমাদের শরীরে বা পেটে চর্বি জমতে দেয় না ফলে তলপেটে মেদও বৃদ্ধি পায় না।
আরো পড়ুন : অর্জুন গাছের ছালের রসের উপকারিতা
এছাড়াও ফলমূল শাকসবজিতে যে ফাইবার থাকে তা আমাদের ক্ষুধার অনুভূতিকে কমিয়ে
দেয়। দৈনিক কয়েকবার ফল খাওয়ার ফলে আমাদের অন্যান্য খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমে
যায়। এ বিশেষ কয়েকটি কাজের জন্যই ফল ও শাকসবজি আমাদের খাদ্য তালিকায়
প্রতিদিন বেশি পরিমাণে রাখা দরকার।
সবুজ চা : আপনারা হয়তোবা সবুজ চায়ের কথা শুনে অবাক হবেন। কিন্তু
সবুজ চা শুধুমাত্র একটি পানীয়ই না। সবুজ চা তে প্রচুর পরিমাণে
এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা আমাদের শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই আমরা মেদ
কমাতে অন্য চায়ের পরিবর্তে সবুজ চা খাওয়ার অভ্যাস করে তুলতে পারি।
মসলা : আমরা রান্নার কাজে যে মসলাগুলো ব্যবহার করি যেমন, পেঁয়াজ,
রসুন, আদা ইত্যাদি এগুলো আমাদের গ্রহণকিত খাবার কে সহজপ্রাচ্য করে তুলে।
তাড়াতাড়ি খাবার হজম হয়। এছাড়া এগুলো আমাদের শরীরে কিছু আয়ুর্বেদিক উপকারিতাও
দিয়ে থাকে। এই মসলাগুলোতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরাসরি তলপেটে চর্বি কমাতে
অংশ নেয়।
আঁশ জাতীয় খাবার : আঁশ বা ফাইবার জাতীয় খাবার আমাদের শরীর থেকে চর্বি কণাকে
মলমূত্রের সাথে দেহ থেকে বের করে দেয় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখে।
তাছাড়া ফাইবার বা আঁশ শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরির জমিয়ে রাখার প্রবণতাকে কমিয়ে
দেয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে আজ জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া উচিত।
শরীরের মেদ কমাতে যেসব খাবার খাবেন না
আমরা এতক্ষণে দেখলাম যে পেটের মেদ কমানোর জন্য আমাদের কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত।
আমরা এখন দেখব যে শরীরের মেদ কমাতে যেসব খাবার আমাদের খাওয়া উচিত নয়। আমাদের
শরীরে অতিরিক্ত মেদের কারণ হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর বা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার। এসব
অনিয়ন্ত্রিত খাবার তালিকার কারণে আমরা এ ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকি।
কিছু কিছু সবজি : আমরা অনেকেই ভাবি যে যেকোনো ধরনের সবজি আমাদের মেদ কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু এমন কিছু কিছু সবজি আছে যেগুলো আমাদের মেদ কমানোর পরিবর্তে বৃদ্ধি করে। যেমন ফুলকপি ও বাঁধাকপি। ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে মেদ জমানো উপাদান মজুদ থাকে। এছাড়া আলুও আমাদের শরীরের মেদ জমাই। তাই এগুলা থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার : ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের জন্য
কতটা যে ক্ষতিকর সেটা আমরা কম বেশি সবাই জানি। ভাজাপোড়াতে সবচাইতে বেশি ময়দা
এবং তেল ব্যবহার করা হয়। যে দুটির মিশ্রণ একত্রে মেদ বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি
কার্যকরী। তাই শরীরের মেদ কমাতে চাইলে ভাজাপোড়া এবং তেল জাতীয় খাবার থেকে বিরত
থাকতে হবে।
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার : বিশেষ করে গরু এবং খাসির মাংস একটি
চর্বি জাতীয় খাবার। অনেকে আমরা এই খাবারগুলো সামনে পেলে অন্যদিকে আর কোন হুশ
থাকে না। ইচ্ছে মতো যতটা সম্ভব খেয়ে ফেলি। কিন্তু একেবারে আমাদের এতটা পরিমাণে
লাল মাংস খাওয়াটা উচিত নয়। এছাড়াও আমরা কিছু মানুষ তরকারিতে অনেক বেশি পরিমাণে
তেল খায়।
এই ধরনের খাবারগুলো থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং তরকারিতে পরিমাণ মতো তেল খাওয়াটাই ভালো হবে। পাশাপাশি গাজর, কচু, বিট এই সবজিগুলো আমাদের শরীরে ফ্যাট তৈরি করে। তাই আমাদের এই খাবার গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যে সবজিও খাবার গুলো আমাদের শরীরে ফ্যাট তৈরি করে না সেগুলো বেশি বেশি খেতে হবে।
পেটের মেদ কমানোর যোগ ব্যায়াম সমূহ
ব্যায়াম হচ্ছে শরীর ফিট রাখার একটি সবচেয়ে বড় মাধ্যম। একমাত্র ব্যায়ামের
মাধ্যমেই আমাদের শরীরের সুস্থতা ঠিক রাখা সম্ভব। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে এবং
অনেক রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যায়াম করলে
মানুষের শরীর ও মন ভালো থাকে। এবং রক্ত চলাচল ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যার কারণে
আমাদের শরীরও সুস্থ থাকে।
আমাদের বিভিন্ন খাবার এবং কার্যক্রমের পাশাপাশি মেদ কমানোর বড় বিষয় হচ্ছে ব্যায়াম করা। ব্যায়ামের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং মেদ কমাতে পারি।সেজন্য আমাদেরকে জানতে হবে যে কোন ব্যায়ামগুলো করলে আমাদের মেদ তাড়াতাড়ি কমে যাবে। মেদ কমানোর জন্য অনেক কয়েক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে।
ব্যায়াম করলে আমাদের শরীর ফিট হয়ে থাকে। এজন্য আমাদের প্রতিদিন অল্প কিছু সময়
হলেও ব্যায়াম করা দরকার। ব্যায়াম করার সবচেয়ে ভালো মোক্ষম সময় হচ্ছে সকাল
বেলা। সকাল বেলা ফজর নামাজ পরে ব্যায়াম করলে খুব বেশি কার্যকারিতা দেখা দেয়।
ব্যায়াম করে খুব তাড়াতাড়ি তল পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
মেদ কমানোর জন্য কি ধরনের ব্যায়াম করা যায় : আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শরীরচর্চার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে। আমরা যদি এর সঠিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে থাকি তাহলে এই ব্যায়ামগুলো করে আমরা অনেক উপকৃত হতে পারব। তাহলে এখন জেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত চর্বি কমাতে কোন কোন ব্যায়াম গুলো করা যায় এবং কিভাবে করা যায়।
দৌড়ানো : আমরা অনেকেই হয়তোবা ভাবি যে দৌড়ানো কি আবার ব্যায়ামের মধ্যে
পড়ে। অনেকে জানে না হয়তোবা দৌড়ানো কত উপকারী একটা ব্যায়াম। দৌড়ালে আমাদের
শরীর অনেক বেশি গরম হয় ফলে শরীর ঘেমে যায়। আর এই দৌড়ানোর ফলে যে ঘাম হয় সে
ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বিগুলো বেরিয়ে যায়।
তাই নিয়মিত দৌড়ালে আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যাবে।
দৌড়ানোর সবচাইতে উত্তম সময় হচ্ছে সকাল বেলা। তাই আমরা যদি এখান থেকে উপকৃত হতে
চাই তাহলে আমাদের সকালবেলা দৌড়ানোর কোন বিকল্প নেই। প্রথমত অল্প অল্প করে দৌড়
শুরু করে পরবর্তীতে দৌড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।
স্কোয়াড : স্কোয়ড ব্যায়ামটি তলপেটে চর্বি কমানোর জন্য অনেক বেশি
কাজে দেয়। আগেই বলি প্রতিটি ব্যায়াম করার জন্য আমাদের আগে শরীর গরম করে নেয়া
উচিত। তা না হলে আমাদের বিভিন্ন রগে টান করতে পারে। এই ব্যায়ামটি করার জন্য
প্রথমে আপনাকে সোজা হয়ে দুই পা কাট বরাবর খুলে দাঁড়াতে হবে।
এরপর দুহাত সামনের দিকে সমান্তরাল করে একটু উঁচিয়ে ধরে পেছনদিকে চেয়ারে বসার মত
করে শুন্যে বসতে হবে। আবার দাঁড়াতে হবে। এইভাবে কিছুক্ষণ ওঠাবসা করতে হবে।। এই
ব্যায়ামটি করার সময় আপনার উরু এবং তলপেটে অনেক বেশি টান অনুভূত হবে। এই
ব্যায়ামটি তলপেটের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
রীচ আপ : এই ব্যায়ামটি করার সময় পেটে প্রচুর পরিমাণে চাপ পড়ে ফলে পেটের চর্বি খুব তাড়াতাড়ি কমে যায়। পেটের চর্বি কমানোর জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। খুব সহজ একটি ব্যায়াম যে ব্যায়ামটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই খুব পরিচিত। চলুন তাহলে জেনে নেই এই ব্যায়ামটি কিভাবে করব। এই ব্যায়ামটি করার জন্য-
প্রথমে আপনাকে একটি শক্ত জায়গায় চিৎ অবস্থায় সোজা হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। তারপর
দুই হাতের পাতা মাথার নিচে দিয়ে মাথাতে ধরতে হবে। তারপর কোমরে নিচ থেকে স্থির
রেখে কোমরের উপর থেকে উপর দিকে উঠতে হবে। তারপর আবার শুয়ে পড়তে হবে। এইভাবে বেশ
কয়েকবার করলে পেটে অনেক টান পড়বে। এই অনুযায়ী ব্যায়ামটি চালিয়ে যেতে হবে।
হাই নিজ : এই ব্যায়ামটিও পেটের চর্বি কমানোর জন্য বেশ উপকারী। ব্যায়ামটি করার জন্য আপনাকে প্রথমে মাটির উপরে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। তারপর একটি পা ভাঁজ করে হাঁটু আপনার বুকের সাথে ঠেকাতে হবে। এরপর পরের পাটি একই কাজ করতে হবে। এইভাবে একই কাজ অনবরত করতে হবে। প্রথমে ধীরে ধীরে করে পরে গতি বাড়াতে হবে।
প্লাঙ্ক পজিশন : এই ব্যায়ামটি পেটের পেশী শক্তিশালী এবং মাথার ব্রেন কে
সতেজ রাখতে সাহায্য করে। যদিও এই ব্যায়ামটি করার সময় পেটে অনেক বেশি চাপ পড়ে
আর এই চাপ পড়ার ফলেই পেটের পেশি অনেক বেশি শক্তিশালী হয় ফলে পেটের যে চর্বিগুলো
থাকে তা খুব সহজেই কেটে যায়। তাহলে এখন জেনে নেই কিভাবে এই ব্যায়ামটি করব।
প্রথমে মাটির উপরে সোজা হয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। এরপর দুই কনুই মাটিতে
রেখে হাত সোজা করে রাখতে হবে এবং কোনুই ও দুই পায়ের পাতার উপর সারা শরীরের
ভর দিয়ে শরীরকে কিছুটা উপরে উঠাতে হবে। এ সময় সারা শরীর একদম তক্তার মতো
শক্ত করে রাখতে হবে এবং সামনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।
এছাড়াও পেটের চর্বি এবং শরীরের যে কোন স্থানে চর্বি কমানোর জন্য আরো অনেক অনেক
ব্যায়াম রয়েছে। যে ব্যায়ামগুলো করলে আমাদের শরীর একদম ঠিক হয়ে থাকবে। শরীর
কমানোর জন্য আপাতত এই কয়েকটি ব্যায়াম নিয়মিত সকাল বেলা করলে আপনি খুব
তাড়াতাড়ি এর সুফল দেখতে পাবেন। তাই পেটের চর্বি কমাতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প
নেই।
তলপেটের মেদ কমানোর ওষুধ
মেদ কমানোর অনেক ঘরোয়া উপায় থাকার পরও অনেকেই ওষুধ খেতে চান। আমরা জানি যে যেকোনো ধরনের ওষুধই আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। কিন্তু ও কিছু কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব কম। আমাদের কোন ওষুধ খেলে ভালো হবে সেই সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে তারপরে ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।
এ ক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী যে ওষুধগুলো দিবে সেগুলা আমাদের নিয়মিত নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে
উপকার পাওয়া যাবে। এই ওষুধ গুলো ব্যবহার করলে আমরা দ্রুত মেদজনিত সমস্যার হাত
থেকে মুক্তি পাবো। দেখা যাক কয়েকটি মেদ কমানোর ওষুধ ও তার কার্যকারিতা।
বর্তমানে বাজারে অনেক কয়েক রকমের ওষুধ আছে যেগুলো মেদ কমিয়ে থাকে। এর
মধ্যে অনেক ওষুধ আছে যেগুলোর অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যা আমাদের
শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে। তাই কোন ওষুধ গুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম
সেগুলোর দিকে আমাদের খেয়াল রেখে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
অরলিসট্যাট (Orlistat) : বাজারে অরলিসট্যাট এর ৬০ মিলিগ্রাম ও ১২০ মিলিগ্রাম এর দুটি ওষুধ পাওয়া যায়। এই ওষুধটি আমাদের পাকস্থলীতে খাবার পরিপাকের সময় চর্বি পরিপাক ও শোষণে বাধা সৃষ্টি করে যায় শুধুমাত্র পরিপাকতন্ত্র কাজ করে। এই ওষুধটি শরীরে চর্বি কমিয়ে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এই ওষুধটি তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
যা দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। মস্তিষ্কের ওপরও এর কোন প্রভাব ফেলে
না। এই ওষুধ গ্রহণের ফলে চর্বি জাতীয় খাবার গুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদার্থে পরিণত
হতে পারেনা ফলে ওই চর্বিগুলো ক্ষুদ্রান্তেই থেকে যায় যা পরে মলমূত্রের সাথে আমাদের
শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। তাই এই চর্বিগুলো আমাদের শরীর রক্তের মাধ্যমে
গ্রহণ করতে পারে না।
যার কারণে আমরা অতিরিক্ত চর্বির হাত থেকে রক্ষা পায়। আপনারা যারা অতিরিক্ত ওজন বা মেদ জাতীয় সমস্যায় ভুগছেন তারা এই ওষুধটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে হুটহাট ভাবে আপনি এইসব ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন না। আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ওষুধগুলো ব্যবহার করতে হবে।
মেদ কমাতে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা
আমরা হয়তোবা অনেকে জানিনা আমরা যখন মানসিক চাপে থাকি তখন আমাদের মেদ বৃদ্ধি
পায়। আমরা প্রতিনিয়তই এই সমস্যাটাই ভুগে থাকি। আমরা মানুষ হিসেবে আমাদের
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য প্রায়ই মানসিক চাপে ভুগে থাকে। তাই এই
সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের মানসিক চাপ মুক্ত থাকা খুব জরুরী।
স্ট্রেস বেলি এটি কোন শারীরিক সমস্যা নয়। এটি সাধারণত মানসিক চাপ এবং মানসিক চাপের ফলে যে হরমোন ক্ষরিত হয় সেই হরমন পেটের চর্বি বৃদ্ধি করে। মানসিক চাপের ফলে কাটিসলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা পেটের চর্বি বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের যতটা সম্ভব মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে এবং নিজেদের মনকে সবসময় জন্য চাঙ্গা রাখা উচিত।
শুয়ে বসে দিন কাটানো যাবে না : আমরা অনেক সময় আমাদের দৈনন্দিন জীবনের
অনেক চিন্তায় বা মানসিক চাপে থাকি। আর মানসিক চাপে থাকার ফলে আমাদের কোন কাজই
করতে মন চায় না সেজন্য আমরা হয়তো বা শুয়ে না হয় বসেই দিন পার করে দেই। শরীরে
অতিরিক্ত মেদ জমার জন্য এটি একটি বড় ধরনের সমস্যা।
তাই আমাদের সবসময়ের জন্য শারীরিক কার্যক্রমের মধ্যে লিপ্ত থাকা প্রয়োজন এতে করে
আমাদের মন ভালো থাকবে এবং সব কাজের প্রতি মনোযোগ আসবে। তাই আমরা যখন যেই সমস্যায়
থাকি না কেন আমাদের একাকী না থেকে বা সারাদিন শুয়ে বসে চিন্তাটা চাইতে অল্প কিছু
সময়ের জন্য হলেও আমাদের শারীরিক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম করা উচিত।
মানসিক চাপমুক্ত থাকার উপায় : আপনি যদি মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন
তাহলে আপনাকে এর থেকে প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এতে করে আপনি প্রকৃতির
মাঝে বা খেলাধুলা করে মানসিক চাপের হাত থেকে দূরে থাকতে পারবেন। বিশেষ করে ঘুমের
পরিমাণ কম হওয়ার জন্য অনেক সময় এই সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
গবেষকদের মতে যারা ছয় ঘন্টার কম এবং ৯ ঘন্টার বেশি ঘুমায় তাদের মেদ জমার আশঙ্কা
বেশি থাকে। এজন্য আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের
জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা। এ অনুযায়ী কাজগুলো করলে মানসিক বিভিন্ন চাপ থেকে
কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে।
অ্যালকোহল বা নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকা
দেখা যায় যে অনেক লোক আছে যারা বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে থাকে তাদের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন কমে যায় এবং এতে করে পেটের অস্বাভাবিক আকার বৃদ্ধি
পায়। নেশা জাতীয় দ্রব্য অ্যালকোহল থাকে। অ্যালকোহল আমাদের শরীরকে ফুলিয়ে যায়
এবং পেটের আকার অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি করে।
এছাড়া যারা নেশা করে তারা সব সময় মানসিকভাবে বিভিন্ন অশান্তিতে থাকে। যার কারণে আমাদের শরীরে মেদ বৃদ্ধি পায়। নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এ এতে করে খাদ্য হজমের ক্ষমতাও হ্রাস পায়। যার ফলে আমাদের শরীরে অস্বাভাবিকভাবে মেদ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তলপেটের মেদ কমাতে কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন করা
দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজ আছে যেগুলো আমাদের অভ্যাসের উপর নির্ভর করে। ঠিক
সেভাবে আমাদের অতিরিক্ত ওজন কমাতে বা তলপেটের মেদ কমানোর জন্য আমাদের কিছু কিছু
অভ্যাস আছে যেগুলো পরিবর্তন করলে আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে। এই পরিবর্তনের জন্য
আমাদেরকে বিশেষ করে খাবার খাওয়ার বিভিন্ন অভ্যাস পরিবর্তন করা উচিত।
তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের এ পরিবর্তনের জন্য কোন কোন অভ্যাস গুলো বাদ
দেওয়া বা পরিবর্তন করা খুব জরুরী -
অস্বাস্থ্যকর বা অতিরিক্ত ঘুমের অভ্যাস বাদ দেওয়া : আমরা অনেকেই আছি যারা
সারাদিন রাত ঘুমের ওপরে থাকি। আমাদের শরীরের যে ঘুমের চাহিদা তার চাইতে অতিরিক্ত
সময় ঘুমের মধ্যে পার করে দিই। অতিরিক্ত ঘুমের ফলে আমাদের শরীরে মেদ জমা শুরু হয়।
তাই অতিরিক্ত বা অস্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস বাদ দিতে হবে।
দ্রুত খাবার খাওয়ার অভ্যাস : দ্রুত খাবার খাওয়াটা আমাদের শরীরের
পক্ষে খুব বেশি প্রভাব ফেলে। দ্রুত খাবার খাওয়ার ফলে আমরা খাবারটি ভালোভাবে
চিবাতে পারি না ফলে আমাদের হজমে বিভিন্ন সমস্যা হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে
দ্রুত খাবার খাওয়ার অভ্যাসটি ত্যাগ করতে হবে।
খাবারের রুটিন ঠিক রাখা : আমাদের বড় একটি সমস্যা হচ্ছে খাবার নিয়মিত সঠিক সময়ে না খাওয়া। আমাদের যে সময়ের খাবার সেই সময়ে খেতে হবে। এতে করে আমাদের হজম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ফলে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা কম থাকবে। কোনো বেলার খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। অবশ্যই খাবারের রুটিন ঠিক রাখতে হবে।
আনমনে খাবার খাওয়া পরিহার : মাঝে মাঝে দেখা যায় অনেকে আছে যে আনমনে
একাধারে খাবার খেতেই আছে। এটি খুব খারাপ একটি অভ্যাস। আমাদের অবশ্যই একটি
নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবার খাওয়া উচিত। সেজন্য আনমনে খাবার খেতে খেতে অতিরিক্ত
খাবার খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
সৌজন্যবোধ থেকে বেশি খাওয়া যাবেনা : অনেক সময় আমরা কারো সাথে খাবার
খেতে খেতে কি পরিমানে খাবার খাই সেই দিকে খেয়াল থাকে না। সেজন্য আমাদের
সৌজন্যবোধ বজায় রাখতে আমাদের যে পরিমাণে খাবার খাবার দরকার সেই পরিমাণ খাবার পর
আর অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এ বিষয়গুলো থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
আরো পড়ুন : আমলকি হরিতকি বহেরার উপকারিতা
সাদা আটা বা সাদা চালের বিকল্প : আমরা জানি যে সাদা আটা আবার সাদা
চালে বেশি পরিমাণে ফ্যাট থাকে। তাই আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে। তাই
সাদা আটা বা সাদা চাল খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিয়ে সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল এবং
সাদা আটার পরিবর্তে উপরে বর্ণিত আটার রুটি খাওয়া যেতে পারে।
বড় প্লেটের বদলে ছোট প্লেট বেছে নিন : বড় প্লেটে করে অনেক বেশি খাবার
নিয়ে একসাথে খাওয়ার চাইতে ছোট প্লেটে অল্প করে খাবার খাওয়াই ভালো। এতে করে
অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাই মেদ কমাতে বড়
প্লেটের থেকে ছোট প্লেট বেছে নিন।
ফ্যাট ফ্রী খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা : যে খাবারগুলোতে ফ্যাটের
পরিমাণ বেশি সে খাবার গুলো একদমই পরিহার করা। সেজন্য খাবার কেনার সময় অবশ্যই এর
মোড়কে ফ্যাটের পরিমাণ যাচাই-বাছাই করে নেয়া উচিত।
এতক্ষণে আপনাদেরকে অনেকগুলো অভ্যাস পরিবর্তন করা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বললাম।
আপনি যদি নিজের শরীরের যেকোনো অংশের মেদ কমাতে চান তাহলে উক্ত অভ্যাসগুলো
পরিবর্তন করলে আপনি অন্যান্য কার্যক্রমের ফল তাড়াতাড়ি হাতেনাতেই পাবেন। তাই যত
তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করে ফেলুন।
মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়
মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায় এবং পুরুষের পেটের মেদ কমানোর উপায় সবগুলোই এক।
দেখা যায় যে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের কোমরে বেশি পরিমাণে মেদ জমে। বিশেষ করে
মহিলাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যাটি দেখা যায়। অনেক মহিলা এই মেদ নিয়ে
অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েন কিন্তু ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান করা সম্ভব।
অতিরিক্ত মেদ হলেই চিন্তার কিছু নেই বা ভেঙে পড়ার কোন কারণ নেই। আপনার যদি ইচ্ছা
থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি খুব সহজেই এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে
আপনাকে শুধু কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে এবং খাবারে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
অবশ্যই এ সকল দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
নিয়মিত কার্ডিও অনুশীলন করা : গবেষকদের মতে অ্যারোবিক অনুশীলন পেটের
মেদ কমাতে সর্বাধিক কাজ করে থাকে। কারডিও অনুশীলন করার জন্য অনেক দিক রয়েছে।
তাছাড়া একসঙ্গে অনেক কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে ব্যায়াম করলেও অনেক কাজে
দেয়।
উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ : দৈনন্দিন খাবার তালিকায় চর্বিহীন
প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। যেমন মুরগি, মাছ, ভেষজ ইত্যাদি। যে খাবারগুলোতে চর্বি বা
ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে সে খাবারগুলো থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। ওজন কমানোর
প্রথম শর্ত হচ্ছে কম ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে এবং বেশি পরিমাণে পোড়াতে হবে।
মহিলা এবং পুরুষদের ডায়েট কন্ট্রোল বা শরীরের বিভিন্ন স্থানে চর্বি কমানোর বিভিন্ন নিয়ম কানুন একই। এতক্ষণে উপরে যা আলোচনা করেছি উক্ত বিষয়বস্তু মহিলাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই উত্তর নিয়ম কানুন মেনে বিশেষ করে খাবার তালিকা ঠিক রেখে অবশ্যই মহিলারাও এই সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে।
পরিশেষে
তলপেটের মেদ কমানোর বিভিন্ন কার্যকরী উপায় সম্পর্কে এতক্ষন আপনাদের সাথে আলোচনা
করলাম। আশা করি পোস্টটি খুব ভালোভাবেপড়েছেন এবং বিস্তারিত বুঝতে
পেরেছেন। তলপেটের মেদ কমানোর জন্য প্রথমত আমাদের যে কাজ সেটি হচ্ছে সঠিক
খাবার তালিকা নির্বাচন করা এবং সঠিক সময়ে পরিমাণ মতোখাবার খাওয়া।
তাই তাড়াতাড়ি যদি ঘরোয়া উপায়ে মেদ কমাতে চান তাহলে ইতোমধ্যে বর্ণিত উপায়
গুলো কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন। এতে করে আশা করি উপকৃত হতে পারবেন। এছাড়াও আপনি
এ বিষয়ে ডাক্তারের থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। অতিরিক্ত মেদ আমাদের শরীরের পক্ষে
অনেক ক্ষতিকর তাই যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা
করুন।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের আজকের আর্টিকেল যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে এবং
পড়ে যদি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন এবং
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আপনাদের সবার মঙ্গল কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আল্লাহ হাফেজ😍
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url