পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার ১০ টি উপকারিতা - অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা জানতে চাইলে এ পোস্টটি আপনার জন্যই। আমরা সাধারণত দেখে থাকি যে মহিলারাই অ্যালোভেরার ব্যবহার বেশি করে থাকে। কিন্তু অ্যালোভেরাতে পুরুষদের জন্যও যে হাজারো উপকারিতা রয়েছে তা জানলে অবাক হবেন।

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা

চলুন তাহলে আজকে এই পোস্টে পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার বিভিন্ন উপকারিতা, অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সহ অ্যালোভেরা সম্পর্কে বিস্তারিত খুঁটিনাটি খুব সুন্দর ভাবে জেনে নেয়া যাক। দেরি না করে চলুন শুরু করি।

পোষ্ট সূচিপত্র - পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা রয়েছে অনেক। অ্যালোভেরা যাকে আমরা বাংলায় বলি ঘৃতকুমারী। এটি খুবই উপকারী এবং পুষ্টিকর একটি ভেষজ। অ্যালোভেরার গুনাগুন বা এর জনপ্রিয়তা কম বেশি আমাদের সকলেরই খুব ভালো করেই জানা। অনেক সময় আগে থেকেই এর ব্যবহার হয়ে আসছে। রূপচর্চা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগের ভেষজ হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

গাছের গোড়া থেকেই লম্বা লম্বা ছুরির মতো রসালো কাণ্ড বা পাতা। দেখতে চমৎকার। অনেকে সৌন্দর্যের জন্য এই গাছটি লাগিয়ে থাকে। দেখতে যেমন সুন্দর গুনেও তেমন চমৎকার। এই গাছটি শুধুমাত্র মহিলাদের জন্যই নয়। পুরুষদের জন্যও অনেক অনেক বেশি উপকারী। চলুন তাহলে ধাপে ধাপে দেখে নেই পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা গুলো।

ত্বক সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে : প্রথমেই বলছি ত্বকের কথা। কেননা আমরা বেশিরভাগ মানুষই অ্যালোভেরা ত্বক অথবা চুলে ব্যবহার করে থাকি। অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে ত্বক সুন্দর, মসৃণ, সুস্থ থাকে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে যার কারণে ত্বক খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয় দেখায়। পুরুষ মানুষ প্রতিদিনের বেশিরভাগ সময়ই বাড়ির বাহিরে কাটায়।

যার কারণে ত্বক রোদে পোড়া সহ বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে। আমরা এটা খুব ভালোভাবেই জানি যে অ্যালোভেরা আমাদের ত্বকের জন্য কতটা উপকারী। তাই আপনি যদি নিয়মিত এলোভেরা ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বক সুন্দর এবং সুস্থ থাকবে।

চুলকে সুন্দর ও সুস্থ রাখে : আমাদের সৌন্দর্যের সবচাইতে বড় একটি বিষয় হচ্ছে চুল। আর সেই চুল যদি হয় অপছন্দনীয় তাহলে বিষয়টি খুব খারাপ দেখায়। তাই আমরা অনেকেই প্রতিনিয়ত চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য কত কি না ব্যবহার করে থাকি। চুলকে সুস্থ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য আপনি চুলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা ব্যবহার করার ফলে চুল অনেক বেশি মজবুত, ঝলমলে, কালো দেখায় এবং চুলের খুশকি দূর করে।

মুখের ব্রণ দূর করে : মুখের ব্রণ দূর করার জন্য অ্যালোভেরা খুবই উপকারী একটি উদ্ভিদ। পুরুষ মানুষের বিশেষ করে যখন একটি ছেলের বয়সন্ধিকাল চলে তখন তার মুখে বেশি পরিমাণে ব্রণ দেখা যায়। এই সময়টাতে ব্রণ দূর করার জন্য অনেকে অনেক কিছুই করে থাকে। এ সময় যদি এলোভেরার পাতা থেকে অ্যালোভেরার জুস সংগ্রহ করে সরাসরি ব্যবহার করা হয় তাহলে মুখের ব্রণ অনেকটাই হ্রাস পায়।

ত্বকের বলি রেখা বা বয়সের ছাপ দূর করে : মহিলা মানুষের তুলনায় মনে হয় যেন পুরুষ মানুষ তাড়াতাড়ি বৃদ্ধ হয়ে যায়। এর কারণ হচ্ছে ত্বকের প্রতি যত্নশীলতার অভাব। অ্যালোভেরাতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি থাকে যা ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের পুষ্টি যোগায় এবং ত্বককে টানটান করে রাখে। যার ফলে মুখমণ্ডলের উপর থেকে বলি রেখা বা বয়সে ছাপ বোঝা যায় না।

হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে : একজন পুরুষ মানুষের সারাদিন কত কাজই না করতে হয়। আর তার এই কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য শরীর সুস্থ রাখা কতটা জরুরি তা আপনি বুঝতে পারছেন। আর শরীর সুস্থ রাখার সবচাইতে বড় একটি বিষয় হচ্ছে হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা। যদি হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে তাহলে সে হৃদপিণ্ড আমাদের সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ মাত্রা ঠিক রাখবে।

আরো পড়ুন : ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম - ড্রাগন ফলের উপকারিতা

আর এই রক্তের প্রবাহ মাত্রা ঠিক থাকার কারণে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে। আর হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকার একটি বড় ঔষধ হচ্ছে অ্যালোভেরা। এলোভেরা আমাদের হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সুস্থ সবল করে তুলে। তাই নিজের শরীর সুস্থ ও সকল রাখতে নিয়মিত এলোভেরা জুস খেতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : অ্যালোভেরাতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি সহ আরো আরো অনেক ধরনের ভিটামিন এবং উপকারী ঔষধি গুন থাকে যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনি বিভিন্ন রোগ বালাই এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খান। অ্যালোভেরা জুস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : দৈনন্দিন জীবনে পেটের বিভিন্ন সমস্যা আমাদের লেগেই থাকে। তার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাস জনিত সমস্যা অন্যতম। অ্যালোভেরা আমাদের গ্যাস জনিত সমস্যা দূর করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে দূরে থাকা যায়। তাই এ সমস্যাগুলো এড়াতে নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন।

পায়ের গোড়ালি ফাটা রোধ করে : আমাদের মধ্যে পুরুষসহ মহিলাদের মধ্যেও এমন মানুষ আছে যাদের পায়ের গোড়ালি ফাটে। বিশেষ করে এই সমস্যাটি শীতকালে বেশি দেখা যায়। কিছুক্ষণ আগে দেখলাম যে অ্যালোভেরা জেল শরীরকে মসৃণ করে। ঠিক তেমনি ভাবে পায়ের গোড়ালি ফাটলে সেখানে এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে এই সমস্যা থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।

ওজন কমাতে সাহায্য করে : অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ পদার্থ রয়েছে যা খুব দ্রুত আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি ক্ষুধা নিবারনেও সাহায্য করে। আর ক্ষুধা নিবারণের ফলে আমাদের শরীরের ওজন কমানো সহজতর হয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকলে নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করে এ সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।

যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে : বর্তমানে আমাদের দেশের পুরুষদের এটি একটি অনেক বড় সমস্যা। অল্প বয়সেই যৌন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীদেরও এই সমস্যাটি দেখা দেয়। এই সমস্যার ভালো এবং সহজ একটি উপায় হচ্ছে অ্যালোভেরা।কারণ এলোভেরা যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।  তাই যারা এ সমস্যায় ভুগছেন, তারা অ্যালোভেরার উপকারিতা গ্রহণ করতে পারেন। 

অ্যালোভেরা জেল মুুখে ব্যবহারের নিয়ম

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা আমরা এতক্ষণে দেখলাম। উপরোক্ত আলোচনা ছাড়াও অ্যালোভেরার আরো কত যে উপকারিতা রয়েছে তা আমাদের কমবেশি সকলেরই জানা। একটি জিনিসের উপকারিতা থাকার পরেও তার সঠিক ব্যবহার না জানার জন্য আমরা সেই উপকারিতাটি সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারি না। তাই প্রতিটি জিনিসের সঠিক ব্যবহার জানার পরে তা ব্যবহার করা উচিত।

অ্যালোভেরা জেল মুুখে ব্যবহারের নিয়ম

অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে অনেকেরই ভালোভাবে জানা নেই। তাই আপনাদেরকে এখন অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। অ্যালোভেরা খুবই উপকারী এবং পুষ্টিকর একটি উদ্ভিদী উপাদান। চলুন তাহলে ধাপে ধাপে জেনে নেয়া যাক অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে।

প্রথমেই এলোভেরার সাথে আপনাকে লেবু নিতে হবে। কারণ এই দুটি খুব অ্যান্টি এইজিং উপাদান সমৃদ্ধ। এগুলো আমাদের ত্বককে আদ্র রাখে এবং ত্বকের দাগ কমাতে সাহায্য করে। প্যাকটি তৈরি করতে আপনাকে এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরার জেল নিতে হবে। তার সাথে আধা টেবিল চামচ লেবুর রস এবং একটি ডিমের সাদা অংশ নিতে হবে।

উক্ত উপাদান গুলো একত্রে মিশিয়ে প্যাকটি তৈরি করতে হবে। প্র্যাকটি তৈরি করার পরে ত্বকের উপরে ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং 15 থেকে 20 মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ব্যবহার করলে আপনি অ্যালোভেরা জেল এর সর্বোচ্চ উপকারিতাটি গ্রহণ করতে পারবেন।

অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

অ্যালোভেরা চুলে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কেও অনেকে জানতে চান। চুলে অ্যালোভেরা জেল সংগ্রহ করে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। খুবই সহজ একটি পদ্ধতি। মুখে অ্যালোভেরা ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন প্যাক তৈরি করতে হয় বা সরাসরিও করা যায়। ঠিক তেমনি চুলেও অ্যালোভেরা সরাসরি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে খুব সহজে ব্যবহারের নিয়মটি দেখে নিন।

  • প্রথমেই আপনাকে অ্যালোভেরার পাতা সংগ্রহ করতে হবে
  • তারপর পাতা থেকে চামচের সাহায্যে অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল গুলো সংগ্রহ করুন
  • এরপর সেই জেল সরাসরি চুলে এবং গোটা মাথায় ভালোভাবে ভূসুন এবং এক ঘন্টা রেখে দিন
  • এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে মাথাটা ধুয়ে ফেলুন
  • সহজ এই প্রক্রিয়াটি নিয়মিত করুন। এতে করে খুব অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি উপকারিতা বুঝতে পারবেন

রাতে অ্যালোভেরা ব্যবহার নিয়ম

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা জানার পাশাপাশি আপনি এতক্ষণে অ্যালোভেরা জেল মুখে ও চুলে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কেও জেনে গেলেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করার সবচাইতে ভালো সময় কোনটি ? এটির উত্তরে বলা যেতে পারে যে, অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করার সবচাইতে ভালো সময় হচ্ছে রাতের বেলা। 

তআরো পড়ুন : ত্বীন ফলের উপকারিতা

আর রাতের বেলা যদি গাছের টাটকা পাতা ব্যবহার করা যায় তাহলে তো কথাই নেই। এতে অনেক বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে। রাতের বেলা আপনার তৈরিকৃত প্যাক দিয়ে রূপচর্চা করতে পারেন। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার এক দেড় ঘন্টা আগে অ্যালোভেরা প্যাকটি মুখ ফেস ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে নেওয়ার পর ত্বকের উপর এটি লাগিয়ে রাখবেন। 1 ঘন্টা পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। সপ্তাহে দুই দিন এই কাজটি করলে যথেষ্ট উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।

খালি পেটে অ্যালোভেরার জুস খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে অ্যালোভেরা জুস খাওয়াটা কতটা যে উপকারিতা আমাদের ধারণারও বাইরে। ইতোমধ্যে আমরা উপরে অ্যালোভেরার অনেকগুলো উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছি। তবুও যেন এর উপকারিতা শেষ হয় না। আমরা যদি নিয়মিত অ্যালোভেরা খাই বা খালি পেটে অ্যালোভেরার জুস তৈরি করে খাই তাহলে সেটি আমাদের জন্য অনেক উপকারী হবে। যেমন

  1. অ্যালোভেরা জুস ক্লান্তি দূর করে এবং দেহকে সতেজ রাখে।
  2. রক্তে কোলেস্টেরল ও সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তচাপ কমায়।
  3. দেহে কোন ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করলে তা অপসারণে সাহায্য করে।
  4. চর্মরোগ প্রতিহত করে এবং দেহে ক্ষতের সৃষ্টি হলে তা পূরণ করতে সাহায্য করে
  5. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
  6. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরে সাদা ব্লাড সেল তৈরি করে যা দেহের ক্ষতিকর ভাইরাস ধ্বংস করে।
  7. শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে।

অ্যালোভেরা জুস তৈরির নিয়ম

অ্যালোভেরার জুস তৈরি করা খুবই সহজ একটি কাজ। তাই প্রথমে আপনাকে টাটকা অ্যালোভেরার একটি পাতা নিতে হবে। পাতাটি ধারালো ছুড়ির মাধ্যমে এক পাশ কেটে ভেতর থেকে জেল গুলো সাবধানে সংগ্রহ করে একটি পরিষ্কার বাটিতে নিতে হবে। এর সাথে আপনি আপনার স্বাদ মত বিভিন্ন কিছু মেশাতে পারেন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য অ্যালোভেরা জেলগুলো দুই ঘন্টা ফ্রিজেও  রাখতে পারেন।

অ্যালোভেরা জুস তৈরির নিয়ম

তারপর সেই জেলির সাথে দিতে পারেন সাদা তিল, তোকমা দানা, কালোজিরা, ইসুবগুলের ভুষি, বাদাম, মধু ইত্যাদি। আপনার পছন্দমত এইসব উপাদান সহ পানি দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্লেন্ড করা শেষে তার সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। এর সাথে লেবুর রস মিশালে পুষ্টিগুণ অনেক বৃদ্ধি পায়।

অ্যালোভেরা জুস খাওয়ার নিয়ম কিভাবে খাবেন

অ্যালোভেরা জুস খাবার তেমন কোন স্পেশাল ধরা বাধা নিয়ম নেই। আমরা সাধারণত বুঝবা শরবত শরীরে ক্লান্তি ভাব আসলে খেয়ে থাকি। ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের শরীর যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন আমরা অ্যালোভেরা জুস খেতে পারি। তবে সকালে খালি পেটে এলোভেরা জুস অনেক বেশি উপকারী। সকালে খালি পেটে আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।

তবে শুধু অ্যালোভেরা জুস বা শরবত হিসেবেই নয় এটি সালাদ হিসেবেও অনেকের কাছে খুব জনপ্রিয়। সালাদ হিসেবে খাওয়ার জন্য অ্যালোভেরা কিউব আকৃতিতে কাটা হয়। তাছাড়া অন্য শরবতের সাথে এই কিউব যোগ করেও খাওয়া যায়। অনেকেই এটি খুব পছন্দ করে থাকেন। অ্যালোভেরা শরবত বা কিউব আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী।

অ্যালোভেরা মুখে মাখলে কি হয়

অ্যালোভেরা মুখে মাখলে কি হয় এই প্রশ্নটি আপনারা অনেকেই করে থাকেন। এতক্ষণে উপরের আলোচনা থেকে বুঝতেই পারলেন যে এলোভেরা কতটা উপকারী একটি ঔষধি উদ্ভিদ। এটি আপনি আপনার ত্বকের ওপর সরাসরি পাতা থেকে সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে পারেন অথবা বিভিন্ন ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

এলোভেরা মুখে মাখলে আপনার ত্বক সুন্দর, আর্দ্র, চকচকে ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। কারণ এলোভেরা আমাদের ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে আমাদের ত্বক সুস্থ রাখে এবং তাকে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। শুধু তাই নয় এটি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন দাগ ও দূর করে থাকে। তাই যদি আপনি প্রাকৃতিকভাবে আপনার চেহারার লাবণ্য ধরে রাখতে চান তাহলে বেশি বেশি মুখে এলোভেরা মাখতে পারেন।

অ্যালোভেরা খাওয়ার অপকারিতা

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা জানার পাশাপাশি আমাদের এর ক্ষতিকর দিকগুলোর দিকেও লক্ষ্য রাখা উচিত। কেননা আমরা এর ক্ষতিকর দিকগুলো যদি না জানি তাহলে উপকারিতা গ্রহণ করতে করতে আমরা ক্ষতিরও সম্মুখীন হতে পারি। তাই আমাদের এর ক্ষতিকর বা সাবধানতার দিকগুলো অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।

একটি জিনিসের অনেক উপকারী দিক থাকলেও যে এর কিছু কিছু ক্ষতিকর দিকও থাকে তা আমাদের সকলেরই জানা। চলুন তাহলে দেখে নিই অ্যালোভেরার ক্ষতিকর বা সাবধানতার দিকগুলো কি কি -

  • প্রথমেই বলব যে অ্যালোভেরা অতিরিক্ত সেবন করা উচিত নয় কারণ এটি রক্তের বৃদ্ধি করে কিন্তু অতিমাত্রায় গ্রহণের ফলে কিডনির ক্ষতি করে।
  • গর্ভবতী মায়েদের অ্যালোভেরা জুস বা অ্যালোভেরা গ্রহণ না করায় ভালো কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
  • অতিমাত্রায় এলোভেরা জুস সেবনের ফলে ডায়রিয়া হতে পারে
  • অ্যালোভেরার পাতার ভেতরে যে হলদে রঙের জেলির মতো থাকে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই এটি এড়িয়ে চলতে হবে।

শেষ কথা - পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা

পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা জানার জন্য আশা করি পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং এ সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পেয়েছেন। সাথে এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সহ এলোভেরা সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক খুঁটিনাটি জানতে পেরেছেন। এলোভেরা সত্যিই একটি অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ঔষধি উদ্ভিদ। যা বিশেষ করে আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

তাই উপরে বর্ণিত উক্ত উপকারিতা গুলো যদি গ্রহণ করতে চান তাহলে নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে আমাদের চুল, ত্বক সহ শরীর অনেক উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবে। অবশেষে আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনা করে এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ😍

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url