তোকমা দানার উপকারিতা - ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম
তোকমা দানার উপকারিতা জানতে চাচ্ছেন ? ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে চলুন আজকে এই পোস্টে আপনাদের সাথে এই সকল প্রশ্নের উত্তর সহ তোকমা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।
তোকমা দানা খুবই উপকারী একটি বীজ যা আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পানীয় বা সালাদের সাথে মিশিয়ে খায় । আমাদের অনেকেরই এর সঠিক উপকারিতা সম্পর্কে জানা নেই। চলুন আজকে সবকিছু পরিষ্কারভাবে জেনে নেয়া যাক।
পোষ্ট সূচীপত্র - তোকমা দানার উপকারিতা অপকারিতা ও খওয়ার নিয়ম
- তোকমা দানা কি
- তোকমা দানার উপকারিতা দেখুন
- ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম
- ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
- খালি পেটে তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
- খালি পেটে তোকমা খাওয়ার অপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কি
- তোকমা খাওয়ার নিয়ম তোকমা কিভাবে খায়
- তোকমা খাওয়ার সঠিক সময়
- তোকমা দানা খাওয়ার অপকারিতা
- বাংলাদেশে তোকমা দানার দাম
- তোকমা দানা কোথায় পাওয়া যায়
- পরিশেষে - তোকমা দানার উপকারিতা - ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম
তোকমা দানা কি
তোকমা দানা সাবজা বীজ বা বেসিল সীডস নামে পরিচিত। এটি আকারে ছোট কালো রঙের হয়ে থাকে যা মিছিল উদ্ভিদের বীজ থেকে আসে। দেখতে কিছুটা চিয়া সীড এর মতই। কিন্তু এর পুষ্টিগুণ চিয়া সীড এর চাইতে একটু আলাদা। অনেকেই চিয়া সীড ও তোকমা দানা কে একই মনে করে থাকেন। কিন্তু এরা সম্পূর্ণই দুটি আলাদা বীজ। চিয়া সীড চিনতে এখানে চাপুন।
তোকমা দানা যা আমরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের পানীয় যেমন শরবত, ডেজার্ট, সালাদ সহ বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকি। তোকমা দানা কে পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পানি শোষণ করে ফুলে ওঠে এবং জেলির মত হয়ে যায়। যে আমরা সহজেই যে কোন কিছুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারি। এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে ও বিভিন্ন পুষ্টিগুণের যোগান দেয়।
তোকমা দানার উপকারিতা দেখুন
তোকমা দানার বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে যে উপকারিতা গুলো আপনাদের সাথে এখন আমি
ধাপে ধাপে আলোচনা করব। এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আমাদের মধ্যে
অনেকেই আছে যারা নিয়মিত তোকমা দানা খেয়ে থাকি। কিন্তু এর সঠিক গুনাগুন বা
উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা নেই। তোকমা দানের উপকারিতা গুলো হল -
শরীর ঠান্ডা রাখে : বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম আমাদের অসহ্য
রকমের অস্বস্তি দেয়। এই গরমের হাত থেকে বাঁচতে নিয়মিত তোকমা দানা খাওয়া যেতে
পারে। কেননা তোকমা দানা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমাই এবং শরীর ঠান্ডা
রাখে।
রক্তে শর্করার মাথা নিয়ন্ত্রণ করে : তোকমা আমাদের শরীর থেকে ধীরে ধীরে শর্করা শোষণ করতে থাকে। যার কারণে আমাদের শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকায় আমরা বিভিন্ন বড় বড় রোগের হাত থেকে মুক্তি পাই।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে : তোকমা দানাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকে
যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে দূরে রাখে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে : তোকমা ডায়েটের জন্য খুব ভালো একটি উদ্ভিদের
বীজ। তোকমা দানায় ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘক্ষণ আমাদের পেট ভরিয়ে রাখে যার কারণে
ক্ষুধা কম লাগে। ফলে ওজন কমানো সহজ হয়।
গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যা দূর করে : তোকমা দানা ভিজে রাখার পর খেলে
গ্যাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ঠান্ডা রাখে।
ত্বকের জন্য সহায়ক : তোকমা দানা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা
আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখে এবং বার্ধক্য জনিত লক্ষণ দূর করে।
ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করে : এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ ও
ভিটামিন শরীরে ইউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন : পুরুষদের জন্য অ্যালোভেরার ১০ টি উপকারিতা
এছাড়াও তোকমা দানার আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি বর্তমানে অনেকের কাছে খুব
জনপ্রিয় একটি বীজ। যা প্রতিনিয়তই আমাদের দেশের মানুষ অনেকেই ব্যবহার করে আসছে।
তাই উপরে উপকারিতা গুলো যদি গ্রহণ করতে চান তাহলে নিয়মিত তোকমা দানা খেতে
পারেন।
ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম
ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পানিতে ভিজিয়ে খেতে হয় এমন অনেক জিনিস আছে যেগুলো আমরা একসাথে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাই। ঠিক সেভাবেই ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা দানা একসাথে ভিজে খাওয়া যায়। এ দুটি একসাথে ভিজিয়ে খাবার নিয়ম গুলো নিচে দেয়া হল।
প্রথমে আপনাকে এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই চা চামচ তোকমা দানা ভিজিয়ে 15 থেকে
20 মিনিট রেখে দিতে হবে। ভিজিয়ে রাখার পর তকমা দানা গুলো যখন পানি শোষণ করে ফুলে
উঠবে তখন তার মধ্যে এক থেকে দুই চা চামচ ইসুবগুলের ভুষি মিশিয়ে দিতে হবে। ভুসি
মেশানোর পরেই আপনি দ্রবণ টি খেতে পারবেন।
এটি খাবারের ৩০ মিনিট আগে অথবা ৩০ মিনিট পরে খেতে পারেন।এটি খালি পেটে খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে। অনেক ডাক্তার বলেন যে রাতের বেলা তোকমা দানা ভিজিয়ে রেখে সকালে তার সাথে ইসুবগুলের ভুষি মিশে সরাসরি খাওয়া যেতে পারে। ইসবগুলের ভুষিও অনেক উপকারী একটি জিনিস। এটি পেটের বিভিন্ন সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা দানা দুটিই খুব পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ জিনিস। এ দুটি পানিতে মিশিয়ে একসাথে খেলে এর উপকারিতা বহুমুখী হতে পারে। বিশেষ করে এ দুটি উচ্চ ফাইবার বিশিষ্ট। যা আমাদের পেটের হজম জনিত সমস্যা দূর করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে দূরে রাখে। এ দুটি একসাথে খাওয়ার ফলে শরীরে সুস্থতা বজায় রাখা যায়।
আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত কোন রকম সমস্যা হয়ে থাকে সাথে সাথে এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ ইসুবগুলের ভুষি ভিজিয়ে খেয়ে নিবেন দেখবেন সাথে সাথেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। এছাড়াও এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর ঠান্ডা থাকে, রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে, এবং শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
তাছাড়া ত্বকের জন্য এটি বেশ উপকারী। এগুলো খাওয়ার সময় আমাদের কিছু বিষয় সচেতন
থাকতে হবে। কারণ এগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি শোষণ করে যার কারণে আমাদের এগুলো
খাওয়ার সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। দিনে আপনি এর মিশ্রণ দুইবার
খেতে পারেন। যদি আপনার স্বাস্থ্যের সমস্যা থাকে বা কোন ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন তবে
আপনার অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এগুলো খাওয়া উচিত।
খালি পেটে তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে তোকমা খাওয়ার কথা বললে আমরা সাধারণত সকাল বেলা খাওয়ার কথা বুঝি। কারণ
আমরা সাধারণত সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে থাকি। তো এই সময় আমরা যদি তোকমা
খাই তাহলে আমরা কি কি উপকারিতা পাবো ? আসলে খালি পেটেই তোকমা যদি খায়
তাহলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়।
সকাল বেলা খালি পেটে তোকমা খেলে এটি আমাদের সারাদিন সতেজ রাখে। কারণ
তোকমা বীজ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি শোষণ করে ফুলে থাকে। যার কারণে আমরা
সারাদিন সতেজ অনুভব করতে থাকি। তাছাড়া আমরা সারা দিনে যে খাবারগুলো খাই সকাল
বেলা খালি পেটে তোকমা খাওয়ার ফলে এই তকমা সে খাবারগুলো হজম করতেও সাহায্য
করে।
আরো পড়ুন : অ্যাভোকাডো ফল খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
তোকমা একটি উচ্চ ফাইবার বিশিষ্ট বীজ যা আমরা সকালবেলা খাবার ফলে এটি আমাদের পেট
দীর্ঘক্ষণ ভরিয়ে রাখে। যার কারণে সারাদিন আমরা কম ক্ষুধা অনুভব করি। আর এর
ফলেই আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমানো সহজ হয়। এছাড়াও সকাল বেলা তোকমা খাওয়ার
আরো কিছু কিছু উপকারিতা রয়েছে, যা উপরে বর্ণনা করা আছে।।
তবে এর জন্য আপনার অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে তোকমা দানা খাবার সময়
অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। শুকনা তোকমা দানা খাওয়া থেকে বিরত
থাকতে হবে এটি পানিতে ভেজানোর পর যখন ফুলে উঠবে তারপরে খেতে হবে। এটি খাবার স্বাদ
বাড়াতে চাইলে এর সাথে লেবুর রস বা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
খালি পেটে তোকমা খাওয়ার অপকারিতা
খালি পেটে তোকমা দানা খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু সম্ভাব্য অপকারিতাও
আছে। তোকমা দানা খাওয়ার আগে আপনার এটির অপকারিতা সম্পর্কেও জানা উচিত। অনেক
সময় খালি পেটে তোকমা দানা খাওয়া কিছু লোকের জন্য বদহজম, পেট ফাঁপা বা গ্যাসের
কারণ হতে পারে। তার একটি খাওয়ার সময় অবশ্যই থাকতে হবে।
তাছাড়া তোকমা দানা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি শোষণ করে। খালি পেটে তোকমা দানা খেলে
এটি আমাদের শরীর থেকে পানি শোষণ করতে পারে। আর এভাবে পানি শোষণ
করলে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই তোকমা দানা
খাওয়ার সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
এছাড়াও রক্ত চাপের উপর প্রভাব, কিছু কিছু মানুষের এলার্জিজনিত সমস্যা, পেট ব্যথা
বা ডায়রিয়া ইত্যাদি হতে পারে। তাই কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হলে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কি
অনেকেই গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে কিনা এ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আসলে তোকমা দানা খাওয়ার অনেক উপকারী তাও কিছু অপকারিতা বা সতর্কতার দিকে রয়েছে। আর একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য আমরা সবসময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে থাকে। তোকমা দানার কিছু কিছু উপকারিতা রয়েছে যেগুলো একজন গর্ভবতী মায়ের উপকারে আসতে পারে।
কিন্তু অনেকেই এই সময় তোকমা দানা থেকে থেকে বিরত থাকেন। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে
গর্ভবতী মায়ের জন্য এটি উপকারী হতে পারে। কারণ এটি আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখেও
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য
হুমকি স্বরূপ হতে পারে। এটি উচ্চ ফাইবার বিশিষ্ট হওয়ায় হজমে সাহায্য করে।
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা গ্রহণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আগে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। যদি তোকমা দানা গ্রহণ করেন তাহলে এটি খুব সামান্য পরিমাণে গ্রহণ করবেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন। তবে বেশিরভাগ জায়গায় দেখা যায় গর্ভাবস্থায় তোকমা না খাওয়াটাই সুবিধাজনক হবে।
তোকমা খাওয়ার নিয়ম তোকমা কিভাবে খায়
তোকমা খাওয়ার সঠিক নিয়ম আমাদের অনেকেরই ভালোভাবে জানা নেই। প্রতিটা জিনিসেরই সঠিক
গুনাগুন গ্রহণ করতে চাইলে এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কেও জানা দরকার। সব জিনিস খাওয়া
বা ব্যবহার করা যেমন কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে, সেরকম তোকমা খাওয়ার ও কিছু
নিয়ম বা পদ্ধতি রয়েছে। চলুন সে নিয়ম বা পদ্ধতি দেখে নিই।
- তোকমা দানা খাওয়ার আগে অবশ্যই এটি পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
- এর জন্য প্রথমে আপনি একটি গ্লাসে, এক থেকে দুই চা চামচ তোকমা দানা ভিজিয়ে দিবেন।
- ১৫ থেকে ২০ মিনিট তোকমা দানা পানিতে রাখলে এটি ফুলে ওঠে জেলির ন্যায় হয়ে যাবে।
- এরপর এটি আপনি বিভিন্ন পানীয়, সালাদ বা ডেজার্ট এর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- জুস বা লেবুর শরবত এর সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়
- তাছাড়া এটি আপনি ভিজিয়ে রাখার পর সরাসরি লেবুর রস বা মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
- দুধ বা দই এর সাথে মিশেও খাওয়া যেতে পারে।
তোকমা খাওয়ার সঠিক সময়
তোকমা দানার উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম সহ অনেক কিছু এতক্ষণে জানলেন। আপনাদের
তোকমা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে বলবো। তোকমা খাওয়ার সঠিক সময় নির্ভর করে আপনি
কোন স্বাস্থ্য উপকারিতাটি চান তার ওপর। বিভিন্ন সময়ে তোকমা খেলে এর বিভিন্ন রকম
উপকারিতা পাওয়া যায়। চলুন নিচে এর কিছু উদাহরণ দেখি নিই।
আরো পড়ুন : আমলকি হরিতকি বহেরার উপকারিতা
আপনি যদি সকালে খালি পেটে তোকমা দানা খান তাহলে এটি আপনাকে সারা দিন সতেজ রাখবে। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করবে পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে। সারাদিন ক্ষুধা কম অনুভব করাবে এবং আমাদের শরীরে যে ক্ষতিকর টক্সিন গুলো থাকে এগুলো বাহিরে বের করতে সাহায্য করবে।
তোকমা আপনি যদি খাবারের আগে খান তাহলে এটি ক্ষুধা নিবারণ করবে এবং শরীরে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে এটি খাবারের ৩০ মিনিট পূর্বে খেতে হবে। খাবারের পরে
খেলে এটি শরীর ঠান্ডা রাখবে এবং খাবার হজম করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি এটি রাতে
ঘুমানোর আগে খান তাহলে এটি আমাদের শরীর শীতল রাখবে ফলে ভালো ঘুম হবে।
দিনের বেলা যদি পানীয় বা শরবতের সাথে খান তাহলে এটি সারাদিন আমাদের কে
হাইড্রেট রাখবে। আমাদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে
তোকমা দানা গ্রহণ করার সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
তোকমা দানা খাওয়ার অপকারিতা
তোকমা দানার উপকারিতা থাকার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
রয়েছে। যেদিকে আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এর উপকারিতা গ্রহণ করতে চাইলে
অবশ্যই অপকারিতার দিকটি আগে জরুরী। তোকমা দানা খাবার সম্ভাব্য কিছু অপকারিতা বা
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হল -
- পেট ফাঁপা বা গ্যাস জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি উচ্চ ফাইবার বিশিষ্ট যার কারণে এ সমস্যাটি হয়।
- অতিরিক্ত ফাইবারের কারণে বদ হজম, পেট ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে।
- তোকমা দানা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু যারা নিম্ন রক্তচাপ বিশিষ্ট মানুষ তাদের এটি গ্রহণ করার ফলে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- গর্ভবতী মায়ের জন্য এ বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকা উচিত। কেননা গর্ভ অবস্থায় এর কিছু উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিকটি বেশি। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
- কিছু কিছু মানুষের তোকমা দানার প্রতি এলার্জি থাকতে পারে। তাই যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের জন্য দূরে থাকাই শ্রেয়।
- তোকমা দানা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি শোষণ করে। তাই এটি খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করলে শরীরে ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশে তোকমা দানার দাম
আমাদের দেশে তোকমা দানার দাম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এছাড়া এটির ব্র্যান্ড এবং গুণগত মানের ওপরও দাম নির্ভর করে। তাছাড়া এটি
প্যাকেটিং করে বিক্রয় করা হয় যার ফলে এর ওজনের ওপর দাম নির্ভর করে। তোকমা দানার
দাম খুব একটা বেশি নয়। এটি ওজনের হালকা হয় অল্প পরিমাণে নিয়েও আপনি অনেক দিন
ধরে ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি ১০০ গ্রাম তোকমা দানা নিতে চান তাহলে এর দাম হবে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। ২৫০ গ্রাম তোকমা দানার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ৫০০ গ্রাম তোকমা দানার দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। আপনি যদি এক কেজি তোকমা কিনতে চান তাহলে এর দাম দাঁড়াবে ৬০০ টাকা। তবে বর্তমানে অনলাইনের বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন রকম অফার থাকে যেখানে আপনি কম দামেও পেতে পারেন।
তোকমা দানা কোথায় পাওয়া যায়
বর্তমানে প্রায় সকল জায়গায় তোকমা দানা পাওয়া যায়। বাজারে যেকোন মুদি
দোকান বা স্বাস্থ্যকর খাদ্য কেন্দ্রের দোকানে পেতে পারেন। তাছাড়া বর্তমানে
অনলাইনের যুগে, অনলাইনের বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে তোকমা দানা প্যাকেটিং করে বিক্রয়
করা হয়। তাই আপনি এটি বাজার থেকেও কিনতে পারেন বা বাড়িতে বসে থেকে অনলাইনে
অর্ডার করে খুব সহজেই কিনে নিতে পারেন।
পরিশেষে - তোকমা দানার উপকারিতা - ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম
তোকমা দানার উপকারিতা, অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম, ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার
নিয়ম সহ তোকমা দানা নিয়ে বিস্তারিত খুঁটিনাটি সবকিছু আলোচনা । পোস্টটি
পড়ে আশা করি বুঝতেই পারছেন তোকমা দানা কতটা উপকারী। তাই উপরে বর্ণিত উপকারিতা
গুলো যদি গ্রহণ করতে চান তাহলে নিয়মিত পরিমান মত তোকমা খেতে পারেন।
কারণ এটি অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি বীজ এবং আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
আশা করি পোস্টটি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকে এই পর্যন্তই । আল্লাহ হাফেজ😍
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url